লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
মাদক একটি সামাজিক ব্যাধি। একটি পরিবারকে ধ্বংস করতে একজন মাদকসেবক বা মাদক কারবারিই যথেষ্ঠ। তাই বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে মাদক মুক্ত রাখতে শাহীন সচেতনতার প্লাটফর্মের উদ্যোগে লালমনিরহাট পৌরসভার তিনটি গ্রামকে মাদকমুক্ত গ্রাম ঘোষণা করেছে এলাকাবাসী।
মাদক মুক্ত ঘোষণাকৃত গ্রামগুলো হলো- ডালপট্টি, শহীদ শাহজাহান কলোনী ও জুম্মাপাড়া।
এদিকে শাহীন সচেতনতার প্লাটফর্ম এর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন লালমনিরহাট পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও লালমনিরহাট পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুস সালাম।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় যুবকদের মাঝে মাদক বিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জায়গায় জায়গায় “মাদক মুক্ত এলাকা, মাদক সেবন ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ, ধরা পরিলে আইনের কাছে সোপর্দ্দ করা হইবে” এই স্লোগান সম্মিলিত ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করেন “শাহীন সচেতনতার প্লাটফর্ম” এর আহবায়ক মোঃ শাহীন আলম বাবু। এ সময় তার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে যোগ দেয় উত্তরা রোড ডাইলপট্টি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল হক মিজু, সহ-সভাপতি আঃ আজিজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবু, প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম প্রচার সম্পাদক বাহাদুর আলী, দপ্তর সম্পাদক এরশাদ আলী, কোষাধ্যক্ষ নুরুন্নবী, সহ-কোষাধ্যক্ষ ফারুকুজ্জামান বাবু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রাজু শেখ, সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ভোবেন চন্দ্র এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হেলালুজ্জামান হেলাল।
জানা গেছে, লালমনিরহাট পৌরসভার ডালপট্টি এলাকা মাদকের স্বর্গরাজ্য। যেখানে হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় মাদকদ্রব্য। মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে গ্রামের উঠতি বয়সী তরুণ, কিশোর, যুবকসহ বয়স্করা। এদের মাধ্যমে পারিবারিক কলোহসহ নানা অপকর্ম সংগঠিত হয়।
“শাহীন সচেতনতার প্লাটফর্ম” এর আহবায়ক শাহীন আলম বাবু বলেন, মাদকের করাল গ্রাস থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করতে আমরা তিনটি গ্রামকে মাদকমুক্ত এলাকা ঘোষনা করেছি। এখানে যারাই মাদক সেবন অথবা ক্রয়-বিক্রয় করবে তাদেরকে সাথে সাথে আইনের কাছে সোপর্দ্দ করা হইবে। তিনি এলাকার সাধারণ নাগরিকের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আরও জানান আমরা কেবল শুরু করেছি জনগণ পাশে থাকলে ভবিষ্যতে পুরো লালমনিরহাট পৌরসভাকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করব ইনশাল্লাহ।
মাদক থেকে ফিরে আসা খলিল নামে এক যুবক বলেন, মাদক সেবনকালে তার পরিবারে নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে তার জেল খাটা ও মাদক নিরাময় কেন্দ্রে থাকতে হয়েছে। সেসময় তাকে গ্রামবাসীর ও পুলিশি ভয়ে থাকতে হয়েছে, এমনকি তার শরীর-স্বাস্থ্যও খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এখন সে আর মাদকসেবন করেন না। যার কারণে অনেক ভালো আছেন এবং এখন সবাই তাকে মূল্যায়ন করে। এখন সে “শাহীন সচেতনতার প্লাটফর্ম” এর সহযোগিতায় চা বিক্রি করে জীবন যাপনের পাশাপাশি গ্রামকে মাদকমুক্ত করতে কাজ করছেন।
লালমনিরহাট পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, মাদকাসক্তে যুব সমাজ সবচেয়ে বেশি আসক্ত হয়। একটা জাতিকে ধ্বংস করতে ওই সমাজের কিশোর ও যুব সমাজই যথেষ্ঠ। মাদকাসক্তের কারণে তারা মানসিকভাবে পঙ্গু, তাদের স্মৃতিশক্তি নষ্ট, অপরাধ প্রবণ ও মাদকের টাকার জন্য মা-বাবার গাঁয়ে হাত পর্যন্ত তুলছে। এই মাদক থেকে যুব সমাজকে রক্ষায় তিনি “শাহীন সচেতনতার প্লাটফর্ম” এর এই উদ্যোগকে কাজে লাগানোর আহবান জানান।